ছাত্রদের ইনকাম করার সেরা ১২টি উপায়: স্টুডেন্ট অনলাইন ইনকাম টিপস
হ্যালো বন্ধুরা! আপনারা যদি অনলাইন থেকে ইনকাম করার কথা ভেবে থাকেন এবং অনলাইন থেকে আয় করার উপায়গুলো সমন্ধে জানতে চান তাহলে আপনি সঠিক জায়গায় এসেছেন। কারণ আজকের আর্টিকেলে আমি আলোচনা করতে চলেছি কিভাবে অনলাইন থেকে ইনকাম করা যায়।
আপনি যদি একজন ছাত্র কিংবা ছাত্রী হয়ে থাকেন তাহলে আপনি খুব সহজেই অনলাইন থেকে আয় করতে পারবেন। কারণ অনলাইন এমন অনেক কাজ রয়েছে যেগুলো করে খুব সহজে টাকা ইনকাম করা যায়।
এই কাজগুলো করে ছাত্রছাত্রীরা তাদের পড়াশোনার পাশাপাশি তাদের নিজেদের পড়াশোনার খরচ চালানোর মতো টাকা ইনকাম করতে পারবে।
বর্তমান সময়ে কিছু ফ্রি ইনকাম ওয়েবসাইট রয়েছে যেগুলো থেকে আয় করা অনেক সহজ। এই কাজগুলো করে অল্প সময়ের মধ্যে ভালো টাকা আয় করা যায়।
আজকের আর্টিকেলে আমি বিভিন্ন ধরনের ইনকাম আইডিয়া সমন্ধে আলোচনা করবো যেগুলো শতভাগ কার্যকর এবং লাভজনক উপায় হিসেবে প্রমাণিত।
চলুন তাহলে কথা না বাড়িয়ে জেনে নেওয়া যাক জনপ্রিয় সেই উপায়গুলো সমন্ধে।
ফ্রিল্যান্সিং
ফ্রিল্যান্সিং করে আয় বর্তমানে সময়ে ছাত্রদের জন্য অন্যতম জনপ্রিয় একটি উপার্জনের মাধ্যম। ফ্রিল্যান্সিং প্লাটফর্মে ছাত্রদের কাজ করার সবচেয়ে বড় সুবিধা হলো এখানে কোনো নির্দিষ্ট প্রতিষ্ঠানের বা অফিস এর আওতায় কাজ করতে হবে না তারা এখানে স্বাধীনভেবে কাজ করতে পারবে। যার ফলে ছাত্ররা পড়াশোনার পাশাপাশি আয় করতে পারে।
ফ্রিল্যান্সিং প্লাটফর্মে বিভিন্ন ধরনের কাজ রয়েছে যেগুলো নির্দিষ্ট স্কিল বা দক্ষতা অনুযায়ী কেউ বেছে নিতে পারে, যেমন—গ্রাফিক ডিজাইন, ওয়েব ডেভেলপমেন্ট, কনটেন্ট রাইটিং, ভিডিও এডিটিং, ডিজিটাল মার্কেটিং, ডাটা এন্ট্রি ইত্যাদি।
বর্তমানে Fiverr, Upwork, Freelancer এবং PeoplePerHour-এর মতো প্ল্যাটফর্মে সহজেই ফ্রিল্যান্সিং কাজ পাওয়া যায়।
শুরুতে একটি নির্দিষ্ট বিষয়ে দক্ষতা অর্জন করা গুরুত্বপূর্ণ, কারণ প্রতিযোগিতামূলক এই বাজারে টিকে থাকতে হলে মানসম্মত কাজ দিতে হয়।
অনলাইন টিউশন
অনলাইন টিউশন ছাত্রদের জন্য ইনকামের অন্যতম জনপ্রিয় ও কার্যকর উপায়। আপনি যদি কোনো নির্দিষ্ট বিষয়ে দক্ষ হয়ে থাকেন তাহলে আপনি অনলাইন প্ল্যাটফর্মে টিউশন করিয়ে আয় করতে পারেন।
বর্তমানে অনেক শিক্ষার্থী স্কুল-কলেজের পড়াশোনা বুঝতে অনলাইন কোচিং বা ব্যক্তিগত টিচার খোঁজে থাকেন। এ কারণে অনলাইন টিউটরদের চাহিদা অনেক।
অনলাইন টিউশন করার জন্য Zoom, Google Meet, Skype-এর মতো প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে শিক্ষার্থীদের ক্লাস নেওয়া যায়।
ইন্টারনেটে এরকম অনেক প্লাটফর্ম রয়েছে যেগুলোতে ক্লাস করিয়ে ইনকাম করা যায়। যেমন Chegg Tutors,Preply,Tutor.com,Wyzant,Skooli,Vedantu,MyPrivateTutor ইত্যাদি।
ব্লগিং
আপনি যদি একজন ছাত্র বা ছাত্রী হয়ে থাকেন তাহলে আপনি খুব সহজেই ব্লগিং করে ইনকাম করতে পারবেন। কারণ ব্লগিং করার জন্য লেখালেখির দক্ষতা থাকতে হয় যা একজন ছাত্র বা ছাত্রীর সব সময়ে থাকে।
ব্লগিং শুরু করতে হলে প্রথমে আপনাকে একটি ব্লগ তৈরি করতে হবে। সেই ব্লগে আপনি আপনার নিজের জ্ঞান মানুষের সাথে শেয়ার করবেন।
বর্তমানে অনেক মানুষ আছে যারা ব্লগিং করে মাসে প্রায় কয়েক লক্ষ টাকা আয় করে থাকেন। এর জন্য তাদের কোনো অফিসে গিয়ে কাজ করতে হয় না, তারা ঘরে বসেই এই কাজগুলো করতে পারেন।
মেয়েদের জন্য এবং ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য ব্লগিং করে আয় হচ্ছে একটি সহজ এবং কার্যকর উপায়। তাই আপনি যদি ব্লগিং করার কথা ভেবে থাকেন তাহলে আর দেরি না করে ব্লগিং শুরু করুন।
অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং
অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং হলো এমন একটি পদ্ধতি যেখানে আপনি কোনো কোম্পানির পণ্য বা সেবা প্রচার করে কমিশনের মাধ্যমে আয় করতে পারবেন।
সাধারণত ব্লগ, ওয়েবসাইট বা সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মে বিভিন্ন পণ্যের লিংক শেয়ার করে এই ইনকাম করা যায়।
যখন কেউ আপনার দেওয়া লিংকের মাধ্যমে কোনো পণ্য কেনবে তখন আপনি সেখান থাকে একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ কমিশন পাবেন।
জনপ্রিয় অ্যাফিলিয়েট প্ল্যাটফর্মগুলোর মধ্যে রয়েছে :
- Amazon
- Associates
- Daraz
- ClickBank
- CJ আফফিলিয়াতে
ছাত্রদের জন্য অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং একটি ভালো অপশন কারণ এটি করতে কোনো ইনভেস্টমেন্ট বা বিনিয়োগ প্রয়োজন হয় না এবং নিজের সুবিধামতো সময় দেওয়া যায়।
ইউটিউব চ্যানেল
অনলাইন ইনকাম করার উপায়গুলো মধ্যে ইউটিউব চ্যানেল থেকে আয় হচ্ছে অন্যতম একটি। প্রযুক্তির এই যুগে অনেক মানুষ আছে যারা তাদের জ্ঞান ব্যবহার করে হাজার হাজার টাকা আয় করে থাকে।
কারণ তারা তাদের সময়ের সঠিক ব্যবহার করতে জানে, আপনি চাইলে আপনার মূল্যবান সময় ভিডিও বা রিলস দেখে নষ্ট না করে তাকে কাজে লাগিয়ে ভালো মানের টাকা আয় করতে পারবেন।
ইউটিউব থেকে আয় করতে হলে আপনাকে প্রথমে ইউটিউবে একটি চ্যানেল খুলতে হবে এবং সেখানে ভিডিও আপলোড করতে হবে।
তবে অবশ্যই আপনার ভিডিও কোয়ালিটি অনেক ভালো হতে হবে কারণ ভালো মানের ভিডিও আপনাকে নতুন নতুন সাবস্ক্রাইবার নিয়ে আসতে সাহায্য করবে।
আপনার চ্যানেলে যখন ১০০০ সাবস্ক্রাইবার এবং ৪০০০০ ঘন্টা ওয়াচ টাইমের ইউটিউব এর শর্ত পূরণ হবে তখন আপনি মনিটাইজেশনের মাধ্যমে টাকা ইনকাম করতে পারবেন।
ছবি বিক্রি
যদি আপনি ছবি তুলতে পছন্দ করেন বা ছবি তোলা আপনার শখ হয়ে থাকে তাহলে এটি শুধু শখের মধ্যে সীমাবদ্ধ না রেখে আয় করার মাধ্যম হিসেবেও ব্যবহার করতে পারবেন।
এমন বিভিন্ন ওয়েবসাইট রয়েছে যেগুলোতে ফটো আপলোড করে বিক্রি করা যায়। যেখান থেকে প্রতিটি ছবির জন্য কমিশনের মাধ্যমে টাকা পাওয়া যায়।
জনপ্রিয় কিছু স্টক ফটো প্ল্যাটফর্ম রয়েছে যেমন Shutterstock, Adobe Stock, Alamy, Getty Images, iStock ইত্যাদি। এইসব প্লাটফর্মে ছবি জমা দিয়ে নিয়মিত আয় করা যায়।
যেকোনো ভালো মানের স্মার্টফোন বা ক্যামেরা দিয়ে তোলা প্রাকৃতিক দৃশ্য, পোর্ট্রেট, প্রযুক্তি, ব্যবসা, ফুড ফটোগ্রাফি ইত্যাদি ধরনের ছবি সহজেই বিক্রি হয়।
ছবি বিক্রি করে আয় করতে হলে আপনাকে প্রথমেই নির্দিষ্ট একটি প্ল্যাটফর্মে অ্যাকাউন্ট খুলতে হবে এবং সেখানে ছবি আপলোড করতে হবে। তবে ছবির গুণগত মান ভালো হতে হবে।
এছাড়া, একবার কোনো ছবি স্টক সাইটে আপলোড করা হলে সেটি বারবার বিক্রি হতে পারে, ফলে এটি প্যাসিভ ইনকামের একটি চমৎকার উপায় হয়ে উঠতে পারে। ছাত্ররা ফটোগ্রাফি শিখে অথবা নিজেদের তোলা ছবি আপলোড করে সহজেই এখান থেকে ভালো মানের টাকা আয় করতে পারবে।
অনলাইন পেইড সার্ভে
অনলাইনে আপনি এমন কিছু ওয়েবসাইট পাবেন যেগুলোতে পেইড সার্ভেগুলো সম্পুর্ন করে টাকা ইনকাম করা যায় আর এ ধরনের কাজগুলো এতোটাই সহজ যে যেকেউ কাজগুলো করতে পারবে।
ছাত্রছাত্রীরা তাদের পড়াশোনার পাশাপাশি প্রতিদিন ২-৩ টা সার্ভে পূরণ করে ভালো অংকের ডলার আয় করতে পারে।
জনপ্রিয় কিছু পেইড সার্ভের ওয়েবসাইট এর মধ্যে রয়েছে: Swagbucks, Survey Junkie, InboxDollars, Opinion Outpost, Pinecone Research, Branded Surveys, LifePoints ইত্যাদি।
কন্টেন্ট রাইটিং
বর্তমান ডিজিটাল যুগে কন্টেন্ট রাইটিং একটি জনপ্রিয় ইনকামের উপায় যা ছাত্রদের জন্য সহজ এবং লাভজনক। যাদের লেখার ভালো দক্ষতা আছে তারা ব্লগ, আর্টিকেল, কন্টেন্ট রাইটিং ইত্যাদির মাধ্যমে আয় করতে পারেন।
ইংরেজি ও বাংলা উভয় ভাষায় কন্টেন্ট রাইটিংয়ের চাহিদা রয়েছে। এই কাজের জন্য আপনার বিষয় কোনো ডিগ্রির প্রয়োজন নেই।
ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেস যেমন Fiverr, Upwork, Freelancer বা PeoplePerHour-এ কন্টেন্ট রাইটারদের জন্য প্রচুর কাজ পাওয়া যায়।
এছাড়া, বিভিন্ন ব্লগ বা ওয়েবসাইটের জন্য পোস্ট লিখেও ইনকাম করা সম্ভব।
যারা নিজেদের ব্লগ তৈরি করতে চান, তারা WordPress বা Blogger ব্যবহার করে ব্লগ চালু করতে পারেন এবং Google AdSense বা অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিংয়ের মাধ্যমে আয় করতে পারেন।
অনলাইন ফ্রিল্যান্সিং প্ল্যাটফর্ম
বর্তমানে ছাত্রদের জন্য ফ্রিল্যান্সিং অন্যতম সেরা অনলাইন ইনকামের উপায়। ফ্রিল্যান্সিংয়ের মাধ্যমে তারা ঘরে বসেই বিভিন্ন ধরনের কাজ করতে পারে যেমন—গ্রাফিক ডিজাইন, কনটেন্ট রাইটিং, ওয়েব ডেভেলপমেন্ট, ডাটা এন্ট্রি, ডিজিটাল মার্কেটিং ইত্যাদি।
জনপ্রিয় ফ্রিল্যান্সিং প্ল্যাটফর্মগুলোর মধ্যে Fiverr, Upwork, Freelancer, PeoplePerHour এবং Toptal উল্লেখযোগ্য।
এসব সাইটে প্রোফাইল তৈরি করে নিজের দক্ষতা অনুযায়ী কাজ পাওয়া যায় যা ছাত্রদের জন্য বাড়তি উপার্জনের সুযোগ তৈরি করে দেয়।
ছত্রদের জন্য এসব কাজ সুবিধাজনক কারণ এই কাজগুলো তারা যেকোনো সময়ে করতে পারবে তাই তাদের পড়াশোনারও কোনো ক্ষতি হবে না।
ভিডিও এডিটিং
বর্তমানে ভিডিও কন্টেন্টের জনপ্রিয়তা বাড়ার সাথে সাথে ভিডিও এডিটরদেরও চাহিদা বেড়েছে। YouTube, Facebook, Instagram এবং Tiktok এর মতো প্ল্যাটফর্মে কনটেন্ট ক্রিয়েটররা প্রতিনিয়ত ভিডিও তৈরি করেন কিন্তু সবাই ভালো মানের ভিডিও এডিটিং করতে পারে না। ফলে ভালো ভিডিও এডিটরদের চাহিদা দিন দিন বাড়ছে।
Adobe Premiere Pro, Final Cut Pro, DaVinci Resolve এবং CapCut ইত্যাদি সফটওয়্যার ব্যবহার করে ভিডিও এডিটিং করা গেলে ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেস যেমন Fiverr, Upwork, এবং Freelancer ইত্যাদি মার্কেটপ্লেসগুলোতে সহজে কাজ পাওয়া যায়।
শুধু ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেস নয় সোশ্যাল মিডিয়া কনটেন্ট ক্রিয়েটরদের জন্য ব্যক্তিগতভাবে কাজ করেও আয় করা সম্ভব।
অনেক YouTuber, ইনফ্লুয়েন্সার এবং ছোট ব্যবসায়ী তাদের ভিডিও এডিটিংয়ের জন্য দক্ষ এডিটর খোঁজেন। এছাড়া, ভিডিও এডিটিং দক্ষতা থাকলে নিজের ইউটিউব চ্যানেল খুলে কন্টেন্ট তৈরি করা যায় যা ভবিষ্যতে ভালো আয়ের উৎস হতে পারে।
Translatetor হিসেবে
বর্তমান তথ্য প্রযুক্তির উন্নয়নের মাধ্যমে অনলাইনে অনেক ধরনের ই-কমার্স ব্যবসা প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে। দিন দিন এগুলো আরও উন্নত হচ্ছে ফলে এর চাহিদা বৃদ্ধি পাচ্ছে।এসব প্রতিষ্ঠানের চাহিদা বৃদ্ধির সাথে সাথে এর গ্রাহকের চাহিদা বৃদ্ধির জন্য অনলাইনে কন্টন্টের সংখ্যা বৃদ্ধি করা হচ্ছে।
আর এসব content manage করার জন্য translator এর গুরুত্ব বৃদ্ধি পাচ্ছে।
কোন প্রতিষ্ঠান তাদের product বিক্রি করতে চাইলে তাকে বিভিন্ন দেশের ভাষা সমন্ধে জানতে হয়। তাই তাদের translator প্রয়োজন হয়।
আপনার যদি বিভিন্ন দেশের ভাষা সমন্ধে জ্ঞান থাকে বা আপনি যদি সেই দেশগুলোর ভাষা translated করতে পারেন তাহলে আপনি একজন translator বা অনুবাদক হিসেবে কাজ করতে পারবেন।
শেষ কথা
তাহলে বন্ধুরা আশা করি আপনারা আজকের আর্টিকেলটির মাধ্যমে ছাত্রদের ইনকাম করার উপায়গুলো সমন্ধে জানতে পেরেছেন।
আর্টিকেলটিতে উল্লেখিত উপায়গুলো ১০০% কার্যকর এবং রিয়াল বলে প্রমাণিত। এই কাজগুলো আপনাদের পড়াশোনার পাশাপাশি করে আপনারা প্যাসিভ ইনকাম করতে পারবেন যা দিয়ে আপনাদের হাত খরচ খুব ভালো মতো চলবে।
আরো পড়ুন :