মাসে ২০ হাজার টাকা ইনকাম করার উপায়
আপনি কি মাসে ২০ হাজার টাকা ইনকাম করার উপায়গুলো সমন্ধে জানতে চাচ্ছেন?
যদি আপনার উত্তরটি হ্যাঁ হয়ে থাকে তাহলে আপনি সঠিক জায়গায় এসেছেন। অনলাইন থেকে খুব সহজে মাসে ২০ হাজার টাকা পর্যন্ত আয় করা যায়। তবে আপনাকে কিছু সঠিক নিয়ম এবং পরিকল্পনা অনুসরণ করতে হবে।

আজকের আর্টিকেলটিতে আমি সেইসব বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করতে চলেছি।
বর্তমান সময়ে ইনকাম করার অনেক সুযোগ রয়েছে বিশেষ করে অনলাইন ও ইন্টারনেটের মাধ্যমে। আপনার ব্যক্তিগত কাজের পাশাপাশি কিছু সময় আপনি এ কাজগুলো করে ভালো টাকা ইনকাম করতে পারবেন।
বিশেষ করে ছাত্রছাত্রীরা তাদের পড়াশোনার পাশাপাশি এ কাজগুলো করে প্রতি মাসে ২০ হাজার টাকা পর্যন্ত ইনকাম করতে পারে।
এ কাজগুলো করার জন্য সঠিক পরিকল্পনা,জ্ঞান এবং বিশেষ দক্ষতা থাকতে হবে। আজকের আর্টিকেলে আমি আলোচনা করতে চলেছি মাসে ২০ টাকা ইনকাম করার কিছু কার্যকর উপায় নিয়ে।
কিভাবে প্রতি মাসে ২০ হাজার টাকা ইনকাম করা যায়?
কোনো চাকরি(job) করা ছাড়াও মাসে ২০ হাজার টাকা ইনকাম করা অনেক উপায় রয়েছে। অনলাইনে এমন অনেক কাজ রয়েছে যার মাধ্যমে আপনি দৈনিক ১০০০ টাকা আয় করতে পারবেন। এ কাজগুলো করার জন্য আপনার কোনো বিশেষ কোনো দক্ষতার প্রয়োজন নেই।
তবে অনলাইন থেকে ইনকাম করার জন্য আপনাকে কাজগুলো ধৈর্যের সাথে করতে হবে। কারণ অনলাইন থেকে ইনকাম করতে হলে তা একদিনে সম্ভব হবে না।
অনলাইন ইনকাম করার জন্য প্রযুক্তিগত জ্ঞান থাকাটা অত্যন্ত জরুরী।
আপনার জ্ঞান এবং প্রযুক্তিগত দক্ষতাকে কাজে লাগিয়ে আপনি মাসে শুধুমাত্র ২০ হাজার টাকা নয়, আপনি এর চেয়ে দ্বিগুণ টাকা ইনকাম করে নিতে পারবেন।
মাসে ২০ হাজার টাকা ইনকাম করার জন্য কি কি প্রয়োজন?
অনলাইন ইনকাম করার কাজগুলো ইন্টারনেট নির্ভর হওয়ায় প্রথমই আপনার একটি দ্রুতগতির ইন্টারনেট সংযোগ থাকতে হবে।
এ কাজগুলো করার জন্য আপনার একটি কম্পিউটার, ল্যাপটপ, স্মার্টফোন, বা ট্যাবলেট থাকা দরকার। কারণ বেশিরভাগ কাজ এই ডিভাইসগুলোর মাধ্যমে সম্পন্ন হয়।
আপনার যদি কোনো একটি বিষয়ে ভালো দক্ষতা থাকে তাহলে আপনি খুব সহজে দৈনিক ৪০০-৫০০ টাকা ইনকাম করতে পারবেন।
অনলাইনে ইনকাম করতে সময় লাগে এবং এটি শুরুতেই খুব বেশি লাভজনক নাও হতে পারে। ধৈর্য ধরে কাজ করলে সফলতা আসবে।
তাহলে চলুন জেনে নেওয়া যাক কী কী কাজ করে প্রতি মাসে বিশ হাজার টাকা ইনকাম করা যাবে?
1. ফ্রিল্যান্সিং করে আয়:

ঘরে বসে ইনকাম করার জনপ্রিয় উপায়গুলোর মধ্যে ফ্রিল্যান্সিং অন্যতম একটি। ফ্রিল্যান্সিং করার জন্য আপনাকে কোনো অফিসে গিয়ে কাজ করতে হবে না। আপনি আপনার নিজের ইচ্ছে অনুযায়ী কাজ করতে পারবেন।
ফ্রিল্যান্সিং করার জন্য আপনাকে নির্দিষ্ট একটি বিষয়ে দক্ষতা অর্জন করতে হবে। জনপ্রিয় কিছু ফ্রিল্যান্সিং দক্ষতা হলো: ওয়েব ডেভেলপমেন্ট, গ্রাফিক ডিজাইন, ডিজিটাল মার্কেটিং, সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং লেখালেখি ও কনটেন্ট ক্রিয়েশন, কপিরাইটিং,ভিডিও এডিটিং ও অ্যানিমেশন ইত্যাদি।
ফ্রিল্যান্সিং করার জন্য মার্কেটপ্লেস নির্বাচন করা জরুরি। আপনার কাজ শুরু করার জন্য ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেসগুলো গুরুত্বপূর্ণ।
জনপ্রিয় কিছু ফ্রিল্যান্সিং ওয়েবসাইট:
আপনার কাজগুলো প্রদর্শন করার জন্য একটি পোর্টফোলিও তৈরি করুন। আপনি নিজস্ব ওয়েবসাইট তৈরি করতে পারেন অথবা Behance, Dribbble-এর মতো প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করতে পারেন।
ক্লায়েন্টদের সাথে যোগাযোগ উন্নত করুন। কারণ ক্লায়েন্টের চাহিদা বুঝে তার সাথে সঠিকভাবে যোগাযোগ করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। পেশাদার মেসেজিং এবং সময়মতো কাজ জমা দেওয়া আপনাকে বিশ্বস্ত ফ্রিল্যান্সার হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করবে।
আপনাকে সময়ের সঠিক ব্যবহার এবং দক্ষতা বাড়াতে হবে কারণ ফ্রিল্যান্সিংয়ে সফল হতে হলে কাজের সময় ঠিকমতো ম্যানেজ করা এবং নতুন নতুন স্কিল শিখে নিজেকে আপডেট রাখা জরুরি।
ফ্রিল্যান্সিং একটি প্রতিযোগিতামূলক ক্ষেত্র, তবে সঠিক পরিশ্রম, ধৈর্য এবং সঠিক পরিকল্পনা আপনাকে সফলতা এনে দিতে পারে। এটি শুধু আয়ের উৎস নয়, বরং স্বাধীনভাবে কাজ করার একটি অসাধারণ সুযোগ।
2. ব্লগিং করে আয়:

বর্তমান সময়ে ব্লগিং করে ২০ হাজার টাকা ইনকাম করা যায়। তবে এটা নির্ভর করে ব্লগের নিশ, কন্টেন্ট, গুণগত মান এবং ভিজিটর বা দর্শকের সংখ্যার উপর।
ব্লগিং এর সবচেয়ে বড় সুবিধা হলো এখানে আপনি কোনো ধরনের ইনভেস্টমেন্ট বা বিনিয়োগ ছাড়াই ঘরে বসে প্রতিদিন কয়েক ঘন্টা সময় দিয়ে অর্থ উপার্জন করতে পারবেন।
ব্লগিং করে আপনি কত টাকা আয় করা যায় তার কোনো নির্দিষ্ট সীমা নেই। আপনি যতটা সময় এবং শ্রম দিয়ে কাজ করবেন ততটা বেশি ইনকাম আপনি করতে পারবেন। ব্লগিং করে সহজেই প্রতিদিন ১০০০ টাকা ইনকাম করা যায়।
ব্লগিং থেকে রোজগার করার জন্য আপনাকে প্রথমে একটি অনলাইন ব্লগ তৈরি করতে হবে। এই কাজটি করার জন্য আপনার ভালো লেখালেখির দক্ষতা থাকার প্রয়োজন হবে৷
যখন আপনার ব্লগে ভালো পরিমাণে ট্রাফিক আসা শুরু হবে তখন গুগল এডসেন্স এর মাধ্যমে আপনার ব্লগ থেকে আয় করতে পারবেন।
ব্লগিং করে আয়ের জন্য ধৈর্য, নিয়মিত কাজ, এবং সঠিক পরিকল্পনা জরুরি। ব্লগের মান বজায় রেখে নিয়মিত কন্টেন্ট পোস্ট করলে এবং পাঠকদের জন্য আকর্ষণীয় কিছু করতে পারলে ব্লগিং হতে পারে আপনার আয়ের একটি চমৎকার উৎস।
3. অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করে আয়:

অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং হলো অনলাইন থেকে ইনকাম করার আর একটি জনপ্রিয় উপায়। অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং এর মাধ্যমে আপনি কোনো কোম্পানির প্রোডাক্ট,পণ্য বা পরিসেবা বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে বিক্রি করতে সাহায্য করতে পারেন।
অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করার জন্য আপনাকে বিভিন্ন অ্যাফিলিয়েট প্রোগ্রামগুলোতে যোগদান করতে হবে। তারপর একটি কোম্পানির অ্যাফিলিয়েট প্রোগ্রামে সাইন আপ করতে হবে।
কোম্পানি আপনাকে একটি ইউনিক ট্র্যাকিং লিংক দিবেন, যা আপনি আপনার ব্লগ, ওয়েবসাইট, বা সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করতে পারবেন।
আপনি যেখানে ভিজিটর বা ফলোয়ার পেতে পারেন, সেখানেই আপনার লিংক শেয়ার করুন।
ভিজিটররা যদি আপনার লিংকের মাধ্যমে পণ্য কিনে, তাহলে আপনি কমিশন পাবেন।অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিংয়ের সুবিধাকম খরচে শুরু করা যায়।
একবার আপনার লিংক শেয়ার করা শুরু হলে অনেকদিন ধরে আপনি সেটার মাধ্যমে আয়ের সুযোগ পাবেন।
অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করার জন্য বিভিন্ন প্লাটফর্ম রয়েছে। তার মধ্যে কয়েকটি জনপ্রিয় অ্যাফিলিয়েট মার্কেটপ্লেস:
- Amazon
- CJ Affiliate (Commission Junction)
- Digistore24
- ShareASale
অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করার জন্য একটি নিশ (Niche) নির্বাচন করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আপনি আপনার পছন্দ, দক্ষতা, এবং বাজারের চাহিদার উপর ভিত্তি করে একটি বিষয় নির্বাচন করতে পারেন। যেমন:প্রযুক্তি (মোবাইল, ল্যাপটপ),স্বাস্থ্য ও ফিটনেস,ফ্যাশন,ভ্রমণ ইত্যাদি।
এফিলিয়েট মার্কেটিং করে প্রতিদিন ১০০০ টাকা বা তার বেশি ইনকাম করা সম্ভব। তবে এজন্য আপনাকে অবশ্যই পরিশ্রম করতে হবে।
4. ইউটিউব চ্যানেল তৈরি করে আয়:

অনলাইন থেকে আয় করার জনপ্রিয় ও লাভজনক উপায়গুলোর মধ্যে ইউটিউব থেকে আয় হচ্ছে অন্যতম একটি। ইউটিউব থেকে আয় করার জন্য আপনাকে প্রথমে একটা ইউটিউব চ্যানেল খুলতে হবে।
তারপর সেখানে নতুন নতুন ভিডিও আপলোড করতে হবে এবং ভিউয়ারের সংখ্যা বাড়াতে হবে।
ইউটিউব ভিডিও তৈরি করার জন্য নিশ(topics) নির্বাচন করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আপনি যে বিষয়টি নিয়ে বেশি আগ্রহী বা যে বিষয়ে আপনার ভালো দক্ষতা রয়েছে সেই বিষয়ের উপর ভিডিও তৈরি করুন। যেমন ভ্লগিং, টেক রিভিউ, রান্না, বা শিক্ষামূলক ভিডিও।
এগুলো ছাড়াও আপনি আপনার ইচ্ছে অনুযায়ী অন্য টপিকের উপর ভিডিও তৈরি করতে পারেন।
আপনি যে ভিডিও গুলো তৈরি করবেন সেগুলো অবশ্যই ভালো মানের হতে হবে যার মাধ্যমে আপনি সহজে ভিজিটরদের আপনার চ্যানেলের সাথে ধরে রাখতে পারবেন। এটি আপনার চ্যানেলকে জনপ্রিয় করে তুলবে।
আপনি ইউটিউব মনেটাইজেশন গুগল অ্যাডসেন্স এর মাধ্যমে টাকা আয় করতে পারবেন। এর জন্য আপনাকে কিছু সত্য পূরণ করতে হবে।
যেমন ১০০০ সাবস্ক্রাইবার এবং ৪০০০ ঘণ্টা ওয়াচটাইম পূর্ণ করতে হবে তারপর আপনি অ্যাডসেন্সের জন্য আবেদন করতে পারবেন।
গুগল আপনার অ্যাডসেন্স আবেদন এপ্রুভ করলে আপনার ভিডিওতে বিজ্ঞাপন দেখানো শুরু হবে। যেমনটি আপনি ইউটিউবে কোনো ভিডিও চালু করলে দেখতে পারেন।
তাহলে বুঝতেই পারছেন ইউটিউব থেকে ভিডিও বানিয়ে মাসে ২০ হাজার টাকা ইনকাম করা বর্তমান সময়ে কতটা সহজ।
5. ছবি বিক্রি করে আয়:

বর্তমান সময়ে ছবি বিক্রি করে আয় করা একটি চমৎকার পেশা এবং শখ হিসেবে বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। ছবি বিক্রি করে সহজে মাসে ২০ হাজার টাকা ইনকাম করা যায়।
আপনি যদি ছবি তোলা পছন্দ করেন বা একজন পেশাদার ফটোগ্রাফার হন, তাহলে আপনার তোলা ছবির মাধ্যমে ভালো টাকা ইনকাম করতে পারবেন।
আপনার তোলা ছবিগুলো আপনি খুব সহজে ইন্টারনেটে বিক্রি করতে পারবেন কারণ ইন্টারনেটের মাধ্যমে ছবি বিক্রি এখন খুবই সহজ হয়ে গেছে।
তবে আপনার তোলা ছবিগুলোকে অবশ্যই ভালো মানের হতে হবে অর্থাৎ high quality এর ছবি হতে হবে।
ছবি বিক্রির মাধ্যমে একবার আপলোড করা ছবির জন্য আপনি বারবার আয় করতে পারবেন। ছবি বিক্রি করার কিছু কার্যকর উপায়।
বিভিন্ন জনপ্রিয় ওয়েবসাইট ও প্ল্যাটফর্মে রয়েছে যেগুলোতে আপনি ছবি আপলোড করতে পারবেন এবং পৃথিবীর যেকোনো স্থানের মানুষের কাছে ছবিগুলো বিক্রি করতে পারবেন।
আপনার নিজের তোলা ছবিগুলো আপনি Shutterstock, Adobe Stock, iStock, Alamy এবং Getty Images-এর মতো জনপ্রিয় সাইটে আপলোড করে বিক্রি করে আয় করতে পারেন।
স্টক ফটোগ্রাফি সাইটগুলো বিভিন্ন প্রফেশনাল ও শখের ফটোগ্রাফারদের তোলা ছবি বিক্রির জন্য সুযোগ দিয়ে থাকেন।
আপনি চাইলে আপনার ছবিগুলো বিক্রির জন্য নিজের ওয়েবসাইট বা ব্লগ তৈরি করতে পারেন। সেখানে ছবি আপলোড করে সরাসরি ক্রেতাদের গ্রাহকদের কাছে বিক্রি করতে পারবেন।
আপনি বিভিন্ন ধরনের ছবি তুলতে পারেন যেমন: প্রকৃতির ছবি, শহরের দৃশ্য,লাইফস্টাইল, ব্যবসায়িক ইত্যাদি।
ছবি বিক্রির মাধ্যমে আয় করে আপনি কত টাকা ইনকাম করতে পারবেন তার কোনো নির্দিষ্ট সীমা নেই। সৃজনশীলতার সাথে কাজ করলে আপনি সহজেই এই সেক্টরে সফল হতে পারবেন।
সঠিক পদ্ধতি অনুসরণ করে এবং ধৈর্য ধরে কাজ করলে, এটি আপনার জন্য একটি চমৎকার আয় ও পেশা হতে পারে।
6. টিউশনি করে আয়:

বর্তমান সময়ে আয় করার অনেক নতুন মাধ্যম তৈরি হয়েছে, সেগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো অনলাইন টিউশন। আপনি যদি পড়াশোনায় দক্ষ হন বা কোনো বিষয়ের উপর আপনি ভালো জ্ঞান রাখেন, তাহলে ঘরে বসেই টিউশনি করিয়ে আপনি মাসে ২০ হাজার টাকা পর্যন্ত ইনকাম করতে পারবেন।
অনলাইন টিউশন গত কয়েক বছরে বিশেষ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে, মূলত কোভিড-১৯ এর পরবর্তী সময়ে। এর পেছনে প্রধান কারণগুলো হলো সহজলভ্য প্রযুক্তি যেমন: স্মার্টফোন, কম্পিউটার এবং ইন্টারনেটের সহজলভ্যতা।
অনলাইন টিউশনের আরেকটি সুবিধা হলো বাড়িতে বসে শিক্ষার্থীদের কাছে পড়ানো যায়, তাই যাতায়াতে সময় নষ্ট হয় না।
আপনি যদি কোনো বিদ্যালয় বা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক বা শিক্ষার্থী হয়ে থাকেন তাহলে আপনি সহজে টিউশনি করে পার্ট-টাইম আয়ে সুযোগ করে নিতে পারবেন।
আপনি বিশেষ কোনো বিষয়ের উপর দক্ষ হয়ে থাকলে সেই বিষয়টি নিয়ে পড়াতে পারেন যেমন: গণিত, ইংরেজি, পদার্থ, রসায়ন বা কোডিং ইত্যাদি বিষয়ে।
অনলাইন টিউশন করার জন্য অনেক জনপ্রিয় প্ল্যাটফর্ম রয়েছে, যেমন: Zoom, Google meet ইত্যাদি।
অনলাইন টিউশন করে কত টাকা আয় করবেন সেটা নির্ভর করে আপনার দক্ষতা এবং শিক্ষার্থীর চাহিদার উপর।
উদাহরণস্বরূপ:এক ঘণ্টার ক্লাসের জন্য ৫০০-২০০০ টাকা আয় করা সম্ভব।বিশেষ কোর্স বা গ্রুপ ক্লাসের মাধ্যমে মাসে ২০,০০০ থেকে ৫০,০০০ টাকা বা তার বেশি আয় করা যায়।
অনলাইন টিউশন হলো এমন একটি পেশা যেখানে আপনি নিজের দক্ষতাকে কাজে লাগিয়ে আয় করার পথ তৈরি করতে পারেন।
এটি শুধু অর্থ উপার্জনের উপায় নয় বরং জ্ঞান ছড়িয়ে দেওয়ারও একটি মাধ্যম। তাই, যদি আপনার ভিতরে শেখানোর ইচ্ছে এবং জ্ঞান থাকে, তবে আজই শুরু করুন অনলাইন টিউশন।
7. ভিডিও এডিটিং করে আয়:

ভিডিও এডিটিং বর্তমান সময়ে একটি অন্যতম জনপ্রিয় এবং চাহিদাসম্পন্ন কাজ। ডিজিটাল যুগে কনটেন্ট তৈরির চাহিদা বাড়ার সাথে সাথে ভিডিও এডিটরদের কাজের সুযোগও বাড়ছে।
আপনি যদি ভিডিও এডিটিং দক্ষ হন বা এই বিষয়ে আগ্রহী হন, তাহলে ঘরে বসেই এই কাজটি করে খুব সহজে মাসে ২০ হাজার টাকা ইনকাম করতে পারবেন।
ফ্রিল্যান্সিং সাইটগুলোতে (যেমন: Upwork, Fiverr, Freelancer) ভিডিও এডিটিংয়ের প্রচুর কাজ পাওয়া যায়। এখানে আপনি বিভিন্ন ধরনের কাজের জন্য প্রোফাইল তৈরি করে ক্লায়েন্টদের সাথে কাজ করতে পারবেন।
বর্তমানে ইউটিউবে কনটেন্ট ক্রিয়েটরদের সংখ্যা দ্রুত বাড়ছে। তবে সবার পক্ষে সময় নিয়ে ভিডিও এডিট করা সম্ভব হয় না। তাদের জন্য আপনি ভিডিও এডিটিং সেবা দিতে পারেন।
আপনার যদি ভালো কনটেন্ট আইডিয়া থাকে, তবে নিজের ইউটিউব চ্যানেল শুরু করতে পারেন। আপনার চ্যানেলের ভিডিওগুলো নিজে এডিট করতে পারবেন এবং পরে মনিটাইজেশনের মাধ্যমে আয় করতে পারবেন।
শিক্ষামূলক বা বিনোদনমূলক কনটেন্ট তৈরি করুন। যেগুলো দেখতে মানুষ বেশি আগ্রহী। নিয়মিত এবং মানসম্মত কনটেন্ট আপলোড করুন। যা ভিজিটরদের আপনার চ্যানেলের সাথে জুড়ে থাকতে সাহায্য করবে।
ভিডিও এডিটিং করার জন্য আপনার একটি ভালো কম্পিউটার বা ল্যাপটপ থাকতে হবে এবং ভিডিও এডিটিং সফটওয়্যার। কাজগুলো ইন্টারনেট নির্ভর হওয়ায় ভালো মানের ইন্টারনেট সংযোগ থাকতে হবে।
ভিডিও এডিটিংয়ের মাধ্যমে ঘরে বসেই আপনি খুব সহজে ভালো ইনকাম করতে পারেন। আপনার দক্ষতা এবং সৃজনশীলতাকে কাজে লাগিয়ে ধীরে ধীরে একটি সফল ক্যারিয়ার গড়ে তোলতে পারবেন।
8. অ্যাপ তৈরি ও মনিটাইজেশ করে আয়:

অ্যাপ তৈরি এবং মনিটাইজেশন করে আয় করার প্রক্রিয়া বর্তমান সময়ে অত্যন্ত জনপ্রিয় এবং লাভজনক একটি কাজ।
আপনি যদি নিজের অ্যাপ তৈরি করতে চান এবং তা থেকে আয় করতে চান, তবে আপনাকে একটি ভালো অ্যাপ তৈরি Idea বেছে নিতে হবে।
আপনি চাইলে বিভিন্ন ধরনের অ্যাপ তৈরি করতে পারেন, যেমন: গেমিং অ্যাপ তৈরি করে বিনোদন প্রদান করুন, শিক্ষামূলক অ্যাপ যেমন ভাষা শেখার বা প্রফেশনাল স্কিল ডেভেলপমেন্ট, কেনাকাটা বা সেবা প্রদানের জন্য অ্যাপ তৈরি করতে পারেন।
অ্যাপ ডেভেলপ করতে হলে আপনাকে কিছু টেকনিক্যাল বিষয় জানতে হবে যেমন: প্রোগ্রামিং ল্যাঙ্গুয়েজ- Android এর জন্য Java/Kotlin, iOS এর জন্য শ্বিফত ইত্যাদি।
আপনি যদি প্রোগ্রামিং না জানেন, তাহলে কোনো ডেভেলপারের সাহায্য নিতে পারেন বা ফ্রিল্যান্সার হায়ার করতে পারেন।
একটি সুন্দর এবং ব্যবহারকারীদের জন্য সহজ ইন্টারফেস ডিজাইন করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। অ্যাপ যেন ব্যবহারকারীদের জন্য সহজে ব্যবহারযোগ্য হয়।
আপনার তৈরি করা অ্যাপটি প্রকাশ করার জন্য আপনি Google Play Store ব্যবহার করতে পারেন।
অ্যাপটি প্রকাশ করার পর অ্যাপ মনিটাইজেশন করতে হবে। মনিটাইজেশনের মাধ্যমে টাকা ইনকাম করা যায়।
অ্যাপ থেকে আয় করার জন্য বিভিন্ন পদ্ধতি আছে। যেমন: ইন-অ্যাপ বিজ্ঞাপন (In-App Ads)আপনার অ্যাপে বিজ্ঞাপন দেখিয়ে আয় করতে পারেন, Google AdMob, Facebook Audience Network।
আপনার অ্যাপ পেইড মডেলে চালু করতে পারেন, যেখানে ব্যবহারকারীদের ডাউনলোড করার জন্য নির্দিষ্ট অর্থ দিতে হবে।
একটি অ্যাপ সফল করার জন্য তার সঠিক প্রচার-প্রচারণা করা প্রয়োজন যেমন: সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং,ইমেইল ক্যাম্পেইন,ইন্টারনেট ব্লগ বা ইউটিউবে রিভিউ ইত্যাদি।
অ্যাপ তৈরি এবং মনিটাইজেশন করে আয় করা সময় সাপেক্ষ এবং ধৈর্যের কাজ। তবে সঠিক পরিকল্পনা এবং ক্রমাগত প্রচেষ্টার মাধ্যমে মাসে ২০ হাজার টাকা ইনকাম করা যায়।
9. কোডিং বা প্রোগ্রামিং শিখিয়ে আয়:

আপনি যদি ভালো কোডিং বা প্রোগ্রামিং করতে পারেন তাহলে এটি হতে পারে আপনার জন্য একটি অন্যতম আয়ের উপায়। কারণ কোডিং বা প্রোগ্রামিং করে আয় হচ্ছে বর্তমান সময়ে একটি কার্যকর এবং লাভজনক কাজ।
আপনার যদি কোডিং করার ভালো দক্ষতা থাকে তাহলে আপনি কোডিং নিয়ে কোর্স তৈরি করতে পারেন এবং যে মানুষগুলো কোডিং শিখতে আগ্রহী তাদের কাছে বিক্রি করে আয় করতে পারেন।
আপনার তৈরি কোর্সগুলো বিভিন্ন মাধ্যমে প্রচার করার জন্য বা বিক্রি করার জন্য নির্দিষ্ট কিছু প্লাটফর্ম বেচে নিতে হবে, অবশ্যই প্লাটফর্মগুলো বিশ্বাসযোগ্য হতে হবে যেমন: ইউটিউব, ফেসবুক ইত্যাদি।
ফ্রিল্যান্সিং প্ল্যাটফর্ম যেমন Upwork, Freelancer, এবং Fiverr-এ কোডিং এর চাহিদা ব্যাপক। ওয়েব ডেভেলপমেন্ট, অ্যাপ ডেভেলপমেন্ট, এবং সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্টের মতো ক্ষেত্রে কাজ করে সহজেই মাসে ২০ হাজার টাকার বেশি আয় করা সম্ভব।
কোডিং শিখিয়ে আয় করার অসংখ্য উপায় আছে, এবং এর মধ্যে থেকে সঠিক পথ বেছে নিলে মাসে ২০ হাজার টাকা বা তারও বেশি আয় করা সম্ভব।
তবে সফলতার জন্য দরকার মানসম্পন্ন কন্টেন্ট, নিয়মিত আপডেট এবং সঠিক মার্কেটিং কৌশল। যদি আপনি আপনার দক্ষতা এবং জ্ঞানের সঠিক ব্যবহার করতে পারেন, তাহলে কোডিং শেখানো একটি লাভজনক পেশা হয়ে উঠতে পারে।
10. ফেসবুক থেকে আয়:

অনলাইন থেকে আয় করার অন্যতম উপায়গুলোর মধ্যে ফেসবুক থেকে আয় হচ্ছে একটি। ফেসবুক থেকে আয় করার বিভিন্ন উপায় রয়েছে যেগুলোর মাধ্যমে আপনি খুব সহজেইমাসে ২০ হাজার টাকা পর্যন্ত আয় করতে পারবেন।
ফেসবুক থেকে আয় করার বিভিন্ন উপায়গুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য কিছু হচ্ছে-Facebook In-stream ads, Reels monetization, Facebook marketplace, Facebook star, Fan subscription ইত্যাদি।
আপনি যদি ফেসবুকে একটি ভালো পেজ তৈরি করতে পারেন এবং সেখানে নিয়মিত মানসম্মত ভিডিও আপলোড করতে পারেন, তাহলে In-Stream Ads ব্যবহার করে আপনি আয় করতে পারবেন।
ফেসবুক মার্কেটপ্লেসে পণ্য বিক্রি করে সরাসরি আয় করা সম্ভব। আপনি এখানে নতুন পণ্য বা হাতের তৈরি বিভিন্ন পণ্য বিক্রি করতে পারবেন অথবা পুরাতন বা ব্যবহৃত পণ্যও বিক্রি করতে পারবেন।
ফেসবুক থেকে ইনকাম করার আরেকটি উপায় হলো ফেসবুক স্টার। ফেসবুক লাইভ ভিডিওতে দর্শকরা স্টার (Stars) পাঠাতে পারেন, যা পরে আপনি বিকাশ বা নগদ এর মাধ্যমে টাকায় রুপান্তর করতে পারবেন।
আপনি যদি লাইভ স্ট্রিমিংয়ে জনপ্রিয়তা অর্জন করতে পারেন, তবে দর্শকদের কাছ থেকে স্টার পাওয়ার মাধ্যমে সরাসরি আয় করতে পারবেন।
FAQ: মাসে ২০ হাজার টাকা ইনকাম
মাসে ২০ হাজার টাকা ইনকাম করার জন্য বেশ কিছু কার্যকর পদ্ধতি রয়েছে, যেমন: ফ্রিল্যান্সিং, অনলাইন টিউটরিং, ই-কমার্স, ব্লগিং ও ইউটিউব ইত্যাদি।
কিছু দ্রুত উপার্জনের উপযোগী স্কিল হলো: ডিজিটাল মার্কেটিং (SEO, সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং), গ্রাফিক ডিজাইন (Canva, Adobe Illustrator), কন্টেন্ট রাইটিং এবং কপিরাইটিং, ওয়েব ডেভেলপমেন্ট (HTML, CSS, JavaScript, WordPress), ভিডিও এডিটিং ও অ্যানিমেশন (Adobe Premiere Pro, After Effects)
ফ্রিল্যান্সিং শুরু করার জন্য কিছু জনপ্রিয় প্ল্যাটফর্ম হলো: Upwork, Fiverr, Freelancer, PeoplePerHour
ইউটিউব থেকে ইনকাম করার কিছু উপায় হলো: মনিটাইজেশন চালু করে বিজ্ঞাপন আয় (AdSense), স্পন্সরশিপ ডিল, অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং, মার্চেন্ডাইজ বিক্রি, চ্যানেল মেম্বারশিপ এবং সুপার চ্যাট ইত্যাদি।
নিম্নলিখিত পণ্যগুলো অনলাইনে সহজেই বিক্রি করে আয় করা যায়: ড্রপশিপিং পণ্য বিক্রি , ডিজিটাল পণ্য বিক্রি, প্রিন্ট-অন-ডিমান্ড পণ্য বিক্রি, হস্তশিল্প বা হোমমেড পণ্য বিক্রি ইত্যাদি।
উত্তর: সময় নির্ভর করে আপনি কোন মাধ্যম বেছে নিচ্ছেন তার উপর:
ফ্রিল্যান্সিং: প্রথমদিকে দিনে ৪-৬ ঘন্টা দিলে কাজ পাওয়া সহজ হয়।
ইউটিউব বা ব্লগিং: নিয়মিত কন্টেন্ট তৈরি ও প্রমোশনের জন্য দৈনিক ৩-৫ ঘন্টা।
ই-কমার্স বা ড্রপশিপিং: অর্ডার ম্যানেজমেন্ট এবং মার্কেটিংয়ের জন্য দৈনিক ২-৪ ঘন্টা।
প্রথম দিকে একটু বেশি সময় দিতে হলেও একবার স্থিতিশীল আয় শুরু হলে সময়ের প্রয়োজন কমে আসবে।
আমাদের শেষ কথা:
হ্যালো বন্ধুরা, আশা করি আজকের আর্টিকেলটির মাধ্যমে আপনারা মাসে ২০ হাজার টাকা ইনকাম করার উপায়গুলো সমন্ধে জানতে পেরেছেন।
মাসে ২০ হাজার টাকা ইনকাম করার জনপ্রিয় এবং কার্যকর উপায়গুলো নিয়ে আমি আজ আলোচনা করেছি।
আর্টিকেলটি ভালো লাগলে আপনার মতামত comment এর মাধ্যমে জানাতে পারেন এবং আর্টিকেলের বিষয়ে কিছু জানার থাকে তা অবশ্যই জানাবেন।
আরও পড়ুন:
আমি টাকা ইনকাম করতে চাই